Form and Content in literary criticism

Every phenomenon or things has a certain content and is manifested in a certain form. Content is the totality of the components

সম্পাদকের কলমে

সম্পাদকের কলমে

Form and Content in literary criticism

Every phenomenon or things has a certain content and is manifested in a certain form. Content is the totality of the components

জিডিপি বাড়ছে কিন্তু বেকারের কাজ কই

গত ২৪ মে, ২০২৫, নীতি আয়োগের ১০ম কাউন্সিল মিটিংয়ের পর বিভিআর সুব্রহ্মনিয়ম (নীতি আয়োগের সিইও) সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “ভারত আজ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। উন্নতির নিরিখে ভারত জাপানকেও ছাড়িয়ে গেছে।” তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর তথ্য উদ্ধৃত করে বলেন, ২০১৪ সালে ভারত ছিল বিশ্বের ১০ম বৃহত্তম অর্থনীতি। তখন ভারতের জিডিপি’র পরিমাণ ছিল ২.০৭ ট্রিলিয়ন ডলার। ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪.১৯ ট্রিলিয়ন ডলার। অনেকের মতে, জিডিপি’র এই বৃদ্ধি ২০১৫ সালের গণনা পদ্ধতির পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ভিত্তিবর্ষকে কম করে ধরার ফল।
তবে এই তথ্যগুলোই এখন দেশের শাসকের তুরুপের তাস। সরকার গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছে ভারত এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। এই অর্জন নিয়ে সরকার উচ্ছ্বাস দেখাচ্ছে এবং র্যা ঙ্কিংয়ে উপর দিকে উঠে আসার সব কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীকে দিচ্ছে। আরও বলা হচ্ছে যে ভারত ২০২৮ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হতে পারে এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে একটি উচ্চ আয়ের, উন্নত দেশে (বিকশিত ভারত) পরিণত হবে।
কিন্তু মানবাধিকার কর্মী আনন্দ তেলতুম্বডে বলছেন, এটি আংশিক সত্য। ভারতের জিডিপি বাড়লেও, ভারত এখনও জাপানকে টপকে যায়নি। এই প্রচারের পেছনে রয়েছে জাতীয়তাবাদী উন্মাদনা। তিনি আরও বলেন, জিডিপি বাড়লেও, সেই বৃদ্ধি কর্মসংস্থান তৈরি করছে না, উৎপাদনশীলতা বাড়াচ্ছে না, গ্রামের মানুষের দুর্দশা কমাচ্ছে না, উলটে বৈষম্য বাড়াচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদদের একাংশ বলছেন, শুধু জিডিপি’র পরিমাণগত বৃদ্ধি দিয়েই উন্নতির বিচার হয় না। আরও অনেক কিছুর উপর উন্নতি নির্ভর করে। জিডিপি’র সাংখ্যমানের দিক দিয়ে ভারত জাপানকে ছাড়িয়ে গেলেও মাথাপিছু জিডিপি (মোট জিডিপি ও মোট জনসংখ্যার গড়)-র দিক থেকে ভারত জাপানের অনেক পেছনে। জাপানের মাথাপিছু আয় ভারতের চেয়ে ১১.৬ গুণ বেশি। মাথাপিছু জিডিপি-তে ভারতের অবস্থান একেবারে নিচের দিকে। বিশ্বের ১৯৪টি দেশের মধ্যে ১৪৩ নম্বরে।
জিডিপি’র সীমাবদ্ধতা
কোনও দেশের জিডিপি’র পরিমাণ সেই দেশের মোট অর্থনীতির আকার বোঝালেও, তা সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অবস্থা, কিংবা সম্পদের সুষম বণ্টন সম্পর্কে তেমন কোনও ধারণা দেয় না। জিডিপি’র হিসাবের সময় বাজারের বাইরে ঘটে যাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যকলাপ (যেমন নারীদের অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজ) বাদ পড়ে যায়। এই কারণে, অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বারবার জাতীয় আয়ের পরিমাপের পদ্ধতি সংস্কারের দাবি তুলেছেন। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রকৃত ছবি পাওয়ার জন্য জিডিপি’র ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা কমিয়ে, অন্যান্য সূচক ব্যবহারের কথা বলেছেন। তা সত্ত্বেও, আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় আলোচনায় জিডিপি’র ব্যবহারই প্রধান হয়ে রয়ে গেছে।
সম্প্রতি, ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা বিচার করার ক্ষেত্রে সরকারি তথ্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই সঠিক চিত্র বেশিরভাগ সময়ই পাওবা যায় না। তাছাড়া বিভিন্ন দেশের জিডিপি’র পরিমাপ পদ্ধতি ভিন্ন হওয়ায় তাদের মধ্যে তুলনা করা বেশ জটিল, যদিও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এটি নির্ভুল করতে সচেষ্ট।
ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি
জুন, ২০২৫-এ বিশ্বব্যাঙ্ক তার সর্বশেষ “গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস” প্রকাশ করেছে। সেই রিপোর্টে ২০২৬ অর্থবর্ষে (এপ্রিল ২০২৫ – মার্চ ২০২৬) ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৩%-এ নামিয়ে আনা হয়েছে। অথচ এবছর জানুয়ারিতেই তারা বৃদ্ধির হার ৬.৭%-এর পূর্বাভাস করেছিল, অর্থাৎ ০.৪ শতাংশ পয়েন্ট কম হওয়ার সম্ভাবনা।
অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার কমার কারণ হিসাবে রপ্তানিতে মন্দা এবং বিনিয়োগে ধীরগতির কথা বিশ্বব্যাঙ্ক উল্লেখ করেছে। তাদের মতে, বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক কার্যকলাপের দুর্বলতা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাধা সৃষ্টি করছে, যার ফলে ভারতের রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, ২০০০-এর দশকে বিশ্ব বাণিজ্যের গড় বৃদ্ধি ছিল ৫%, যা এখন ২০২০-এর দশকে ৩%-এর নিচে নেমে এসেছে। বিশ্ব বাজারে চাহিদার ঘাটতি ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষমতাকে সরাসরি প্রভাবিত করছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত কি আন্তর্জাতিক বাজারে তার রপ্তানির পরিমাণ ধরে রাখতে পারবে?
অন্যদিকে, বিনিয়োগে ধীরগতির ব্যাখ্যা হিসাবে বলা হয়েছে– বিশ্ব অর্থনীতিতে এই মুহূর্তে এক ধরনের অনিশ্চয়তা চলছে। এমন অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা তাদের মূলধন ব্যয়ের ক্ষেত্রে বেশি মাত্রায় সতর্ক থাকেন, যার ফলে বেসরকারি বিনিয়োগে একটা মন্দা আসে। বিশ্বজুড়ে এই ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার ফলে, ভারত অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বাড়াতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
এরপরও, বিশ্বব্যাঙ্ক আশাবাদী। তারা জোর দিয়ে বলছে, ভারত তাদের দ্রুততম বৃদ্ধির হার বজায় রাখবে। ২০২৭ এবং ২০২৮ অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধি পুনরায় প্রতি বছর গড়ে ৬.৬% হবে। ২০২৬ অর্থবর্ষের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াও জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৫% করেছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার তাদের এপ্রিলের আপডেটে ভারতের ২০২৬ অর্থবর্ষের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.২% করেছে। এই বৃদ্ধি মূলত পরিষেবা খাতের। শিল্পায়নে কোনও গতি নেই। তাই চাকরির সুযোগও সীমিত।
তবে এই কথাটা বলাই যায়, ভারত তার অর্থনৈতিক যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে এখন দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে দেশের জিডিপি’র বৃদ্ধি-তা নিয়ে হইচই চলছে। অন্যদিকে বেকারত্ব ও দারিদ্রের মতো গভীর চ্যালেঞ্জের সামনে দেশকে অসহায় লাগছে।
কর্মসংস্থানহীন বৃদ্ধি
সংখ্যার বিচারে জিডিপি’র বৃদ্ধি— তার অর্থ ভারতের অর্থনীতি দ্রুত গতিতে এগচ্ছে। তবে, এই বৃদ্ধি কি দেশের সকল স্তরের মানুষের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে পারছে? ভারত মূলত পুঁজি-নির্ভর শিল্প এবং পরিষেবা খাতের উপর নির্ভর করে অর্থনীতির বৃদ্ধি ঘটাচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তি, আর্থিক পরিষেবা— ইত্যাদি খাতগুলো দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। এখানে মূলত উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিকের প্রয়োজন। অদক্ষ শ্রমিকদের কাজের সুযোগ নেই বললেই চলে। এই বৃদ্ধিতে দেশের বেশিরভাগ কর্মপ্রার্থীদের খুব একটা সুবিধা হয় না। অর্থাৎ “কর্মসংস্থানহীন বৃদ্ধি” বা “জবলেস গ্রোথ”-কে মডেল করেই ভারত উন্নতির স্বপ্ন দেখছে। এখানেই উদ্বেগ।
মিনিস্ট্রি অব স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন দ্বারা প্রকাশিত ‘পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভে (মাসিক’ অনুযায়ী, মে ২০২৫-এ ভারতের সামগ্রিক বেকারত্বের হার ছিল ৫.৬%। এই পরিসংখ্যান আপাতদৃষ্টিতে কম মনে হলেও, এর গভীরে গেলে প্রকৃত চিত্রটা আরও উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে। ১৫-২৯ বছর বয়সি যুবকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ১৩.৮% (জাতীয় গড়), যা অত্যন্ত গুরুতর। শহরাঞ্চলে এই হার আরও বেশি, প্রায় ১৭.৯%। ভারতের বিশাল কর্মক্ষম জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত এবং উন্নতমানের কাজের সুযোগ তৈরি না হওয়াটা দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের পথে এক বড় বাধা।
আগেই উল্লেখিত হয়েছে ভারতের ‘কর্মসংস্থানহীন বৃদ্ধি’-র মূল কারণ পুঁজি-নির্ভর শিল্প ও পরিষেবা খাতের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা। এর পাশাপাশি, কর্মসংস্থানের জন্য কৃষি খাতের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা এবং ছোট ও মাঝারি শিল্পের দুর্বলতা নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাধা দিচ্ছে। শিল্পে ক্রমবর্ধমান স্বয়ংক্রিয়তার প্রভাবও শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা কমাচ্ছে। তবে, এই সঙ্কটের সবচেয়ে বড় কারণ হলো শিক্ষাব্যবস্থা ও শিল্পের চাহিদার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের রিপোর্টগুলো বারবার কর্মমুখী শিক্ষার অপ্রতুলতার ওপর জোর দিচ্ছে। এটিই বেকারত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। আমাদের যুবসমাজ উচ্চশিক্ষা শেষ করে যখন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছে, তখন তাদের তাত্ত্বিক জ্ঞান হয়তো থাকছে, কিন্তু বাস্তব কর্মজীবনের জন্য যে ধরনের ব্যবহারিক দক্ষতা প্রয়োজন তা তাদের থাকছে না। ফলে একদিকে যেমন প্রচুর সংখ্যক শিক্ষিত বেকার যুবক তৈরি হচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে শিল্পগুলো দক্ষ শ্রমিকের অভাবে ভুগছে। শিক্ষাব্যবস্থায় যুগোপযোগী পরিবর্তন এনে শিল্পক্ষেত্রের চাহিদার অনুযায়ী দক্ষতাসম্পন্ন করে তোলার জন্য যে কর্মসূচি দরকার তার অভাব প্রকট।
উন্নয়নের বৈষম্য
বেকারত্বের পাশাপাশি দারিদ্রও ভারতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি সত্ত্বেও, দেশের আয় বৈষম্য চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২০১৯ সালের অক্সফামের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের শীর্ষ ১% ধনীর হাতে দেশের মোট সম্পদের ৪০% কেন্দ্রীভূত, যা সমাজের অর্থনৈতিক বিভাজনকে স্পষ্ট করে তোলে।
এই পরিস্থিতিতে, এপ্রিল, ২০২৫-এ বিশ্বব্যাঙ্ক তাদের ‘পভার্টি অ্যান্ড ইক্যুইটি ব্রিফ’ রিপোর্টে জানিয়েছে যে, ২০১১-১২ সালে ভারতের চরম দারিদ্রের হার ছিল ১৬.২%, তা ২০২২-২৩ সালে কমে ২.৩%-এ এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ভারতের দারিদ্রের হার দারুণভাবে কমেছে। কিন্তূ নির্দিষ্ট আয়ের মাপকাঠিতে দারিদ্রের এই পরিমাপ। ফলে দারিদ্র হ্রাসের এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ রয়েছে। দারিদ্র কেবল আয়ের ভিত্তিতে পরিমাপ করা যায় না, এর রয়েছে বহুমাত্রিক দিক (মাল্টি ডায়মেনশনাল পভার্টি)। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুষ্টি, পানীয় জল, স্যানিটেশন, বাসস্থানের অভাব– এই সব ক্ষেত্রে অগ্রগতি কতটা হয়েছে তা দেখাও জরুরি।
আবার দারিদ্র হ্রাসের সঙ্গে দেশের মানুষের খিদে কমার সরাসরি সম্পর্ক। কিন্তু ২০২৪ সালের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের তালিকায় ১২৭টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান হয়েছে ১০৫ নম্বরে এবং স্কোর মাত্র ২৭.৩। এই র্যা ঙ্কিং— ভারতে দারিদ্র হ্রাসের যে দাবি বিশ্বব্যাঙ্ক করেছে, তার সঙ্গে মোটেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এছাড়া দেশের পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের অর্ধেকেরও বেশি দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টিতে ভুগছে। এই ঘটনা, বিশ্বব্যাঙ্কের দারিদ্র কমার যে তথ্য, তার সঙ্গে মোটেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই প্রসঙ্গে আরও একটি প্রশ্ন উত্থাপন করা যায়— সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন (ন্যাশনাল ফুড সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা এনএফএসএ)-এর অধীনে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে দারিদ্র হ্রাসের তথ্য যদি সত্যি হয়, তাহলে দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী (বিপিএল) পরিবারদের জন্য ‘সরকারি খাদ্য সহায়তা’ কর্মসূচিতে ভরতুকি পাওয়ার যোগ্য পরিবারের সংখ্যা কেন দিন দিন বাড়ছে?
অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নই কি পথ
আলোচনায় পরিষ্কার, ভারতের অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধি পেলেও, বেকারত্ব ও দারিদ্রের মতো চ্যালেঞ্জগুলো রয়ে গেছে। এই অর্থনৈতিক বৃদ্ধি যদি সমাজের কেবল নির্দিষ্ট কিছু খাত বা শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে তা দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ঘটাতে পারবে না।
তাই প্রশ্ন হলো, আমরা কি শুধু জিডিপি বৃদ্ধির পেছনে ছুটবো, নাকি অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধির দিকেও সমানভাবে নজর দেব? অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধি মানে যেখানে অর্থনৈতিক অগ্রগতির সুফল সমাজের সব স্তরের মানুষ সমানভাবে ভোগ করবে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কর্মসংস্থানমুখী শিল্পে বিনিয়োগ, দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি এবং সবার জন্য উচ্চমানের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য প্রয়োজন মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং শ্রম খাতের আধুনিকীকরণ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সরকারকে তাদের কাজের জন্য জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকা।
শেষে যেটা বলার, ভারতের আসল চ্যালেঞ্জ শুধু জিডিপি বাড়ানো নয়, বরং সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা। তবেই ভারতের বর্তমান অর্থনৈতিক বৃদ্ধি “সবার জন্য উন্নয়ন” ঘটাবে নচেৎ তা মুষ্টিমেয় কিছু ধনীর সম্পদকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। @দেবাশিস মিথিয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Comments

About

ranjan.254@gmail.com Avatar

Work Experience

Technologies

Creating