Form and Content in literary criticism

Every phenomenon or things has a certain content and is manifested in a certain form. Content is the totality of the components

সম্পাদকের কলমে

সম্পাদকের কলমে

Form and Content in literary criticism

Every phenomenon or things has a certain content and is manifested in a certain form. Content is the totality of the components

জোহরান মামদানি কি বিশ্বের সমাজতন্ত্রীদের আশার আলো দেখাচ্ছেন?

নিউ ইয়র্কের মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি, যিনি প্রাইমারিতে জয়ী, তাঁকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘কমিউনিস্ট পাগল’ বলে বর্ণনা করেছেন। আরও একজন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান তাঁকে নির্বাসিত করার দাবি জানিয়েছেন। যাঁরা নিজের জন্মভূমি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে বসতি স্থাপন করেছেন, উন্নত জীবনের সন্ধানে গিয়ে যাঁদের কঠিন সত্যের মুখে পড়তে হয়েছে, বিশ্ব রাজনীতি ডানপন্থী মোড় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ তাঁদের জীবনধারা বদলে যাচ্ছে।

জোহরান একজন ডেমোক্র্যাট। তাঁর পূর্বপুরুষরা ভারত থেকে চলে এসে প্রথমে উগান্ডা এবং পরে আমেরিকায় বসবাস শুরু করেছিলেন। তিনি বলিউডের বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ারের ছেলে। মামদানির ‘কমিউনিস্ট’ ধারণা ছিল প্রত্যেক নিউ ইয়র্কবাসীর জীবনকে উন্নত করা। নির্বাচনী প্রচারে তিনি বিনামূল্যে বাস পরিষেবা, ৩০ ডলার ন্যূনতম মজুরি, বাড়ি ভাড়া কমানো ও শিশুদের যত্নের বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের একটি নিবেদিতপ্রাণ দল ঘরে ঘরে গিয়ে তাঁর হয়ে প্রচার চালিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার শক্তিশালী প্রচার এতটাই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে যে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুওমো লক্ষ লক্ষ ডলার ব্যয় করেও পরাজিত হয়েছেন। জোহরানের জয় কেবল তাঁর নিজের পার্টিকেই নয়, ক্ষমতাসীন রিপাবলিকানদেরও বিস্মিত করেছে। রিপাবলিকরা সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকায় নির্বাচনী প্রচারের নতুন কৌশল দেখে অবাক হয়েছে। এটি এক ধরণের ক্ষুদ্র বিপ্লব।

মামদানির উপর আক্রমণের দু’টি দিক রয়েছে। একজন মার্কিন নাগরিক হয়েও তিনি ‘শ্বেতাঙ্গ’ অভিবাসী নন এবং দ্বিতীয়ত তিনি একজন মুসলিম। তাই বর্ণবাদ এবং ইসলামোফোবিয়া একসঙ্গে কাজ করেছে। তবুও, তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা এত সুপরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে যে, ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান উভয় শিবিরের প্রচারকরা অবাক হয়ে গিয়েছেন। কেউ কেউ তাঁর জয়কে ‘অতি বাম’ প্রবণতা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। আবার কেউ কেউ ভাবছেন যে আমেরিকায় ‘সামাজিক গণতন্ত্র’ চালু করার কোনও চিন্তাভাবনা আছে কি না।

দুনিয়ার বাকি দেশে, বিশেষ করে ভারতে বাম দলগুলি উচ্ছ্বসিত। কারণ, তাদের আদর্শ পুঁজিবাদী দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এই বছরের নভেম্বরে আসন্ন নির্বাচনে নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদের জন্য তিনি অন্যতম দাবিদার। তবে তাঁর দৃঢ় প্যালেস্তাইনপন্থী অবস্থান তাঁর জয়ের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, নিউ ইয়র্ক সিটি ঐতিহ্যগতভাবে ইহুদিদের একটি শক্ত ঘাঁটি। বিরোধীরা ইতিমধ্যেই তাঁর ‘ইহুদি-বিদ্বেষ’-এর বিরুদ্ধে সোচ্চার। এক ই ছুতোকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশিরভাগ মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তহবিল বন্ধ করার জন্য ব্যবহার করেছেন।

মামদানির কৌশলগত জয় ভবিষ্যতে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নির্বাচনী প্রচার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনবে তা এক প্রকার নিশ্চিত। ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থানের জন্য তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে মামদানির দক্ষতা রিপাবলিকান পার্টিতেও উদ্বেগের কারণ হতে পারে। আমেরিকায় ‘ইহুদি-বিদ্বেষের জন্মস্থান’ হিসেবে চিহ্নিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর যে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা পর্যালোচনা করা যেতে পারে। আন্তর্জাতিকভাবে, বাম এবং সমাজতান্ত্রিক শক্তিগুলি উৎসাহিত হতে পারে। কিন্তু প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সৌনকের জন্য ভারতীয় প্রবাসীদের যে রকম অনুভূতি ছিল, মামদানির সঙ্গেও ঠিক একই রকম হবে।  ঋষি ভারতীয় কম ব্রিটিশ বেশি ছিলেন। মামদানি মূলত একজন আমেরিকান এবং প্রবাসীরা তাঁকে ভারতীয় ভেবে ভুল করবেন। যদিও মীরা নায়ারের সৌজন্যে তাঁর প্রচারের সময় প্রচুর হিন্দি গান বাজানো হয়েছিল।

ভারতের সমাজতন্ত্রীরা হয়তো মামদানির জয়কে কঠিন সময়ে আশার আলো হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন। যখন গোটা বিশ্ব ‘ডানপন্থী’ মোড় নিচ্ছে, যেখানে তাঁরা ‘ফ্যাসিবাদের’ ধারা আবিষ্কার করছেন।

নিউ ইয়র্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর কিন্তু এটি গোটা আমেরিকার মেজাজকে প্রতিফলিত করে না। যদিও এটি সত্যি যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি অনেকেরই মোহভঙ্গ হতে শুরু হয়েছে। মামদানি ট্রাম্পের ইজরায়েল-পন্থী অবস্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস দেখিয়েছেন। তাঁর আদর্শগত অবস্থানও প্রশংসার যোগ্য। পরিবর্তন এখন পর্যন্ত এইটুকুই।

উত্তর সম্পাদকীয় | আজকাল / বুড়োশিব দাশগুপ্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Comments

About

ranjan.254@gmail.com Avatar

Work Experience

Technologies

Creating